• রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • ভাদ্র ২৪ ১৪৩১

  • || ০৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

দৈনিক গোপালগঞ্জ

গোপালগঞ্জে প্রণোদনার ১৫ হাজার নারিকেল গাছের চারা বিতরণ

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ৬ জুলাই ২০২৪  

পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, বজ্রপাত নিয়ন্ত্রণ, পুষ্টির চাহিদা পুরণ, তেলের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে গোপালগঞ্জে প্রণোদনার ১৫ হাজার নারিকেল গাছের চারা বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে।
জেলার ৫ উপজেলায় পরিবেশ বান্ধব নারিকেল গাছ বৃদ্ধির লক্ষ্যেই সরকার বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির উপ-পরিচালক আঃ কাদের সরদার বলেন, গোপালগঞ্জ জেলার ৫ উপজেলার ৩ হাজার কৃষকের মধ্যে ৫টি করে মোট ১৫ হাজার উচ্চ ফলনশীল নারিকেল গাছের চারা বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। এরমধ্যে  গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ৬০০ জন কৃষকের মধ্যে ৩ হাজার টি নারিকেলের চারা, মুকসুদপুর উপজেলার ৬০০ জন কৃষকের মধ্যে ৩ হাজার টি  নারিকেলের চারা, কাশিয়ানী উপজেলার ৬০০ জন কৃষকের মধ্যে ৩ হাজার টি নারিকেলের চারা, কোটালীপাড়া উপজেলার ৬৫০ জন কৃষকের মধ্যে ৩ হাজার ২৫০টি নারিকেলের চারা ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ৫৫০ জন কৃষকের মধ্যে ২ হাজার ৭৫০টি নারিকেলের চারা বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে।
নারিকেল পরিবেশ বান্ধব বৃক্ষ। নারিকেল গাছ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে ও বজ্রপাত নিরোধক। ডাব ও নারিকেল থেকে মানব দেহের জন্য প্রয়োজনীয় অনেক পুষ্টি পাওয়া যায়। নারিকেলের তেল উৎপাদন বৃদ্ধি করে আমদানী নির্ভরতা কমানো সম্ভব। তাই এই বছর জাতীয় বৃক্ষ রোপণ অভিযানের অংশ হিসেবে সরকার গোপালগঞ্জে ১৫ হাজার নারিকেলের চারা রোপণের উদ্যোগ গ্রহণ করে। আমরা জুন মাসের মাঝামাঝি ১৫ হাজার নারিকেলের চারা বরাদ্দ পাই। তারপর বিতরণ শুরু করি। ইতিমধ্যে বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মাফরোজা আক্তার বলেন, ক্লাইমেট চেঞ্জের ঝুঁকি মোকবেলায় নারিকেল গাছের ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। ইতিমধ্যে বজ্রপতে প্রাণহানির সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ গাছ বজ্রপাতরোধী। তাই নারিকেল গাছ বজ্রপাত রোধ করে মানুষ ও প্রণির জীবন রক্ষা করবে। এ চারা বিতরণের সময় রোপণ পদ্ধতি ও পরিচর্যা সম্পর্কে কৃষকদের অবহিত করেছি। কৃষকরা এ চারা নিয়ে রোপণ করেছন।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার উরফি ইউনিয়নের মানিকহার গ্রামের কৃষক স্বপন চাকি  বলেন, আমি ৫টি নারিকেলের চারা গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি অফিস থেকে পেয়েছি। চারা দেয়ার সময় কৃষি অফিসার মাফরোজা আক্তার নারিকেলের চারা রোপণ ও পরিচর্যা সম্পর্কে পরামর্শ দিয়েছেন। তার পরামর্শে চারা রোপণ করেছি। এ পরামর্শ অনুসরণ করেই নারিকেল গাছ পরিচর্যা করব। নারিকেল গাছ এত উপকারী বৃক্ষ তা আগে জানতাম না। বাজারে ডাব ও নারিকেলের ভাল দাম রয়েছে। তাই এখান থেকে আয়ের একটা ব্যবস্থা হবে। চারা বিতরণের সময় কৃষি অফিসার মাফরোজা আক্তার এ বিষয়ে আমাদের অবহিত করেছেন।
গোপালগঞ্জের পরিবেশ রক্ষা কর্মী বিধান চন্দ্র টিকাদার বলেন, বিগত ৩০ বছর আগে  গোপালগঞ্জ জেলায় ৩ লাখ নারিকেল গাছ ছিল। এখন আছে মাত্র ১ লাখ ৫০ হাজার। ৩০ বছরে এই জেলায় নতুন বাড়িঘর নির্মাণ ও নির্বিাচারে বৃক্ষ নিধন করায় অন্তত ৫০ ভাগ নারিকেল গাছ বিলুপ্ত হয়েছে। এ কারণে বজ্রপাতে প্রাণহানির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। নারিকেল গাছ ঝড় ও ঝঞ্ঝার বাতাস প্রতিরোধ করে। পরিবেশ বান্ধব এই গাছ থেকে পুষ্টি পাওয়া যায়। এছাড়া নারিকেল থেকে তেল উৎপাদিত হয়। সরকার  গোপালগঞ্জে গত বছর ২০ হাজার ও এ বছর ১৫ হাজার নারিকেলের চারা বিতরণ করেছে। এ ৩৫ হাজার নারকেলের চারা রোপণ করা হয়েছে । সরকারের এ উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই।  গোপালগঞ্জে নারিকেল গাছ আরো বৃদ্ধি করতে হবে। এভাবে নারিকেলের চাষাবাদ বৃদ্ধি করে পরিবেশ ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি নারিকেল তেলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে হবে। তাহলেই সরকারের উদ্দেশ্য সফল হবে।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ