• শনিবার ২৯ জুন ২০২৪ ||

  • আষাঢ় ১৫ ১৪৩১

  • || ২১ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

এলডিসি উত্তরণে সুইডেনের সমর্থন চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ২৬ জুন ২০২৪  

স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে বাংলাদেশের সহজ উত্তরণে সুইডেনের সমর্থন চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমরা এলডিসি থেকে সহজভাবে উত্তরণের জন্য সুইডেনের সমর্থন ও সহযোগিতা চাইছি।’ বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডিশ রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ভন লিন্ডে গতকাল মঙ্গলবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎ করার সময় সরকারপ্রধান এই সমর্থন কামনা করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া।

সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব মো. নাঈমুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী এই উত্তরণের জন্য জিএসপি প্লাস সুবিধা প্রদানে সুইডেনকে অনুরোধ করেছেন। জবাবে সুইডেনের রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রীকে জানান, তাদেরও এ ব্যাপারে আগ্রহ রয়েছে।

সুইডেনের সঙ্গে বাংলাদেশের বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা রয়েছে এবং এর বেশির ভাগই তৈরি পোশাকের (আরএমজি)। রাষ্ট্রদূত বলেন, তার দেশ এই খাতে (আরএমজি) সহযোগিতা প্রসারিত করবে এবং বিশেষ করে, তারা জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশে তাদের প্রতিশ্রæতির কারণে সামাজিক ও পরিবেশগত দিকগুলোকে টেকসই রাখাকে অগ্রাধিকার দিতে চায়। প্রধানমন্ত্রীর ভিশন-২০৪১ সম্পর্কে আলেকজান্দ্রা বলেন, এই ডিজিটাল যাত্রায় সুইডেন বাংলাদেশকে সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতা করবে।

এ সময় শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের জন্য সুইডেনের প্রতি আহ্বান জানান। আলোচনায় রোহিঙ্গা ইস্যু উঠলে প্রধানমন্ত্রী মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একমত পোষণ করে বলেন, তারাও অনুকূল পরিবেশ বিরাজ না করলে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে বলবে না। তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারে বিরোধপূর্ণ পরিস্থিতির সমাধান না হওয়া পর্যন্ত এবং তাদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের পরিবেশ তৈরি না করা পর্যন্ত তারা তাদের ফিরে যেতে বলতে পারবেন না।’

বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৩০ হাজার নতুন রোহিঙ্গা শিশুর জন্ম হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের কারণে স্থানীয় বাংলাদেশিরা তাদের চাকরি হারাচ্ছে। পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয় জনগণের কর্মসংস্থানে অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে। সরকার রোহিঙ্গাদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাসহ ভালো ব্যবস্থা করায় ভাসানচরে রোহিঙ্গারা উন্নত জীবনযাপন করতে পারছে।

রাষ্ট্রদূত বলেন, রোহিঙ্গা ও আশ্রয়দাতা স¤প্রদায় উভয়ের জন্য অনুকূল পরিস্থিতি নিশ্চিত করতে তারা কক্সবাজারে আশ্রয়দাতা স¤প্রদায়ের জন্য বিশেষ প্রকল্প নিশ্চিত করেছেন। প্রায় সাত বছর ধরে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর উদারতারও প্রশংসা করেন তিনি। কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালে বাংলাদেশে এসেছিলেন উল্লেখ করে আলেকজান্দ্রা বার্গ ভন লিন্ডে প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, বাংলাদেশ মহামারি মোকাবিলায় দুর্দান্ত ব্যবস্থাপনা দেখিয়েছে। আমি বাংলাদেশের সফল কোভিড-১৯ ব্যবস্থাপনা প্রত্যক্ষ করেছি- যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। তিনি বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নেরও ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশি নারীরা অত্যন্ত প্রাণবন্ত ও শক্ত-সমর্থ।

রাষ্ট্রদূত বলেন, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার তাদের আগ্রহের খাত এবং তারা এসব খাতে আরো উন্নতি ও স্বচ্ছতা আনার উপায় খুঁজে বের করতে সহযোগিতা বাড়াতে চান। তিনি বাংলাদেশে তার দায়িত্ব পালনকালে সব ধরনের সমর্থন ও সহযোগিতার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ